The Mighty INDIA CALLING: যে অভিযানের শুরু কোলকাতায় (পর্ব ২)

গলা ফাটিয়ে চিৎকার দিচ্ছি, কিন্তু তাতে কোন কাজ হচ্ছে না, বুকের ঢিপঢিপানিটাও এতটুকু কমছে না।

কি আশ্চর্য! আমি সত্যিই তাহলে রওয়ানা হলাম…………… ৪৩ দিনের জন্য, তাও আবার আম্মুকে ছাড়া……চিন্তা করতেই ঢিপঢিপানি আবার বেড়ে গেল।

মোটামুটি শাহবাগ পর্যন্ত আমরা হৈচৈ চিৎকার করতেই লাগলাম শ্যামলি কোম্পানির সৌহার্দ নামক বিলাসবহুল বাসের ভেতরে। বাইরে রাত ১২.৩০-১.০০ টা বাজে, কিন্তু তাতে আমাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নাই।

সবাই একটু ঠান্ডা হয়ে গেলে আমি নিজের বসার জায়গার দিকে মনোযোগ দিলাম। সবার পিছনের সিট। ৯০ ডিগ্রী অ্যাঙ্গেল, জানালার পাশে। সমস্যা হওয়ার কথা না। তাও ভালো আমি তো সিট পেলাম, বুবাইদা তো কোন সিট না পেয়ে সুন্দর ফ্লোরে আসন গেরে বসলো। সামনে বড় স্ক্রিনে পিকে দেখানো শুরু হলো। কিন্তু মনের মধ্যে টেনশন আর বুকের ঢিপঢিপানি নিয়ে সিনেমা না দেখাটাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে বলে মনে করলাম।

মন অন্যদিকে ঘুরানোর জন্য পাশে বসা সারার সাথে রেগুলার টাইপ প্যাচাল পাড়তে শুরু করলাম। এক পর্যায়ে সারা কোন রকম সিগ্নাল না দিয়েই গভীর ঘুমে অচেতন হয়ে গেলো। সারার কাধেঁ হেলান দিয়ে আমিও ঘুমানোর চেষ্টা করলাম যদিও জানতাম যে ঘুম আসবে না। যার জীবনে হাতে গোনা এক দুই দিন ক্লান্ত হয়ে গাড়িতে ঘুমিয়ে পড়ার রেকর্ড ছাড়া আর কোন রেকর্ড নাই এইরকম দিনে তার যে ঘুম আসবে না- এই কথাটা বুঝতে পারা খুবই স্বাভাবিক। তারপরও সামনে কি দিন আসছে কোন আইডিয়া নাই। তারপরও বিশ্রাম নেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করলাম আমি। চেষ্টাটা পুরাই বৃথা গেলো।

গভীর রাতে যখন দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে উঠলাম টের পেলাম বাইরে বৃষ্টি পড়ছে। আমাদের সবাইকে জাগিয়ে বোর্ডিং পাস পূরণ করতে বলা হলো। এর আগে থেকেই রুবাইদা আমাকে আর সারাকে বাই টার্ন নিচে বসার অফার ফিরিয়ে দিয়েছিল। এবার শুভ, রিজভী আর তুষারকে দিলো। মনে মনে স্যালুট দিলাম- হ্যাটস অফ রুবাইদা।

বাসের ড্রাইভার অত্যন্ত চমৎকার করে চালিয়ে মোটামুটি ভোর ৬.২০শে বেনাপোল বর্ডারে পৌঁছিয়ে দিলো। চারপাশে ঘন কুয়াশা। ভয়ংকর শীতে কাঁপতে কাঁপতে আমি নেমে খুঁজতে গেলাম বাথরুম। কিন্তু অফিসাররা আসে নাই বলে আমাদের ভিতরে ঢুকতে দিলো না। আবার কাঁপতে কাঁপতে বাসে উঠে বসলাম। কি শীতরে বাবা, সোয়েটার মানে না!

sfe
বেনাপোল পেট্রোপোল বর্ডারে হাসিখুশি দ্বিমিকবাসী (কৃতজ্ঞতায় বৃষ্টি মজুমদার)

কিছুক্ষন পর অন্ধকার কেটে আলো ফুটতে শুরু করলো। আবার নেমে খুঁজতে গেলাম বাথরুম। এবার বাথরুম পেলাম তবে পানি নাই। পরে অনেক ভিতরে আরও একটা বাথরুম আবিষ্কার করলাম, সেটাতে আবার আলো নাই। কে জানি একজন বললো, ভালোই হলো ভিতরের ময়লা চোখে দেখা যাবে না। যাই হোক নাক চাপা দিয়ে একজন করে করে ঢুকলাম। একটু ফ্রেশ হওয়ার পর সবাইকেই বেশ ফুরফুরা মনে হলো। আমরা ওয়েটিং এ বসে দুনিয়ার গল্প করতে শুরু করলাম। সামনের দিনগুলো কেমন হবে……… ০৯ ব্যাচের সাথে পাল্লা দিয়ে আমরাও ঘুরবো………বরফের মধ্যে কেমন করে পোজ দিবো এইসব বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলি আর হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাই। আশেপাশের লোক সব অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে। আমরা পাত্তা দেই না। উচ্চস্বরে হাসতে থাকি……………।

অবশেষে বোর্ডিং পাস জমা দিয়ে, লাইভ ফটো তুলে বের হয়ে আসি। আদিবার আব্বুর সৌজন্যে বর্ডারে আমরা এক্সট্রা খাতির যত্ন পাই। অনেকে সেখানেই টাকা ভাঙ্গিয়ে রুপি করে ফেলে, অবশ্য তার জন্য বাসে সবাইকে বসে থাকতে হয় অনেকক্ষণ। বসে থাকতে থাকতে এক সময় বিরক্তি ধরে যায়। হিমি তো মেজাজ গরম করেই ফেলে।

যাই হোক আমরা ১০ টার দিকে বর্ডার ক্রস করে পেট্রোপোলে ঢুকি। দেশ ছেড়ে বিদেশে প্রবেশ, অনেকেই উত্তেজিত বোধ করে। বাস থেকে নেমে ইন্ডিয়ার মাটিতে প্রথম পা রাখি। বেশ অদ্ভূত অনুভূতি হলো, গেটের ওপারে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ আর আমি আছি ইন্ডিয়ার মাটিতে দাঁড়িয়ে! ভারি অদ্ভূত। অবশ্য খুব তাড়াতাড়ি এসব কাব্যি ছেড়ে দৌড়ালাম লাইন ধরতে। ভারতে প্রবেশের লাইন।

আশেপাশে দালালদের ছড়াছড়ি আর সব রাগি রাগি বিএসেফের লোক। দাঁত চিবিয়ে চিবিয়ে বারবার বলতে লাগলো, ‘ লাইন সিধা কারো, লাইন সিধা কারো’। এইসব হিন্দি শুনে আমার গা জ্বালা করতে লাগলো, কিন্তু কিছু করার নাই- আগামী দেড় মাস আমাদের এইসব কথা বার্তা শুনে কাটাতে হবে। ভাঙ্গাচোড়া অফিসে ঢোকার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বিরক্তি ধরে যায়। এরমধ্যে সুহাইলা আমাকে দেখালো, দেয়ালে একটা সাইন বোর্ডে লাল রঙ দিয়ে লিখা আছে ‘ভারতে যাইবার পথ’। অত্যন্ত হাস্যকর লাগলো আমাদের কাছে। অবশেষে এক সময় আমরা পাসপোর্টে সিল লাগিয়ে আবার লাইভ ছবি তুলে বের হয়ে আসলাম। ভেতরে অনেকেই আমাদের কাছে জানতে চাইলো এত মানুষ কেন যাচ্ছি, কত দিনের জন্য যাচ্ছি, সাথে টিচার কে কে- এই সব কথা।

আমাদের মধ্যে সারাই সবার আগে ১৫ রুপি দিয়ে ব্রিটানিয়া চকোলেট ফ্লেভারর কেক কিনলো। বাসে উঠে সেটাতে ভাগ বসালাম। একসময় সবাই চলে আসলে ১১টার সময় বাস ছেড়ে দিলো। সবাই আবার একটা সম্মিলিত চিৎকার দিলাম- আমরা ফাইনালি ইন্ডিয়ায় ঢুকে পড়েছি, কি আনন্দ! কি আনন্দ!!

পথে বিএসেফ টাইপের একটা লোক উঠলো বাসে চেক করার জন্য। একমাত্র জুবায়েরকেই জিজ্ঞাসাবাদ করলো। যখন শুনলো আমরা সবাই একসাথে বেড়াতে যাচ্ছি তখন আর বেশি কিছু না করে আমাদের ছেড়ে দিলো। বাস আবার চলতে শুরু করলো। আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম। ঘরবাড়িগুলো ছোট ছোট, টালি দেওয়া টিনের ঘর- দেখেই বোঝা যায় এটা বাংলাদেশ নয়, অন্য কোন দেশ। আস্তে আস্তে গ্রাম ছেড়ে শহুরে ভাব শুরু হতে লাগলো। হাস্যকর সব নামের দোকানপাট, হোটেলের নাম ‘তুমি আসবে বলে’, স্কুলের নাম ‘মোনালিসা’- অদ্ভূত!

ইতোমধ্যে আমার এক পাশে সারা অন্য পাশে রুবাইদা গভীর ঘুমে অচেতন। প্রচন্ড ক্লান্তিতে আমার চোখ বুজে আসছে কিন্তু ঘুমাতে পারছি না। সারার কাঁধে মাথা রেখে চোখ বন্ধ করে পড়ে রইলাম। শেষ হয় না কেন এই যাত্রা?

মোটামুটি বিকাল চারটার দিকে আমরা নামলাম মার্কুইজ স্ট্রিটে শ্যামলী বাস কাউন্টারের সামনে। সেখানে মাইশার আম্মুকে দেখে খুব খুশি লাগলো- বিদেশের মাটিতে একজন দেশের মানুষ। আন্টি একটা অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নদীয়ায় এসেছিলেন। তাই আমাদের রিসিভ করতে টাইমমত এসে দাঁড়িয়ে ছিলেন আগেভাগেই। ছেচল্লিশজন মানুষ প্রায় শ খানেক লাগেজ নিয়ে কোনরকমে ঢুকলাম ছোট্ট একটা ওয়েটিং রুমে। কমিটির লোকজন হোটেল ঠিক করতে গেল। জানা গেলো যে ভি আই পি কন্টিনেন্টাল নামের যে হোটেলের কথা আমরা ভিসা ফর্মে দিয়েছিলাম, সেটা শুধুই দেওয়ার জন্য দেওয়া হয়েছে। আমরা থাকবো আরও কমদামি টাইপ হোটেলে। আধা ঘন্টা পর যখন আমরা শুনলাম হোটেল পাওয়া গেছে তখন কারো গায়ে কোন শক্তি নেই। ধুঁকতে ধুঁকতে আমরা লাগেজ নিয়ে বের হলাম। হোটেলটা কয়েক কদম সামনেই পাওয়া গেছে, হোটেল প্যারাডাইজ।

হোটেলটা ঠিক হোটেল না, কেমন জানি ভুতুড়ে জায়গা। চিপা অন্ধকার এন্ট্রি দিয়ে ঢুকে সরু সিড়ি দিয়ে উঠে তিন তলায় আমি আর মজুমদার সবার আগে রুম ঠিক করলাম। রুমগুলো দেখলেই কেমন মন খারাপ হয়ে যাওয়ার মতন। ছোট্ট একটা অন্ধকার রুমে ডাবল বেড, একটা টেবিল, কাপড় ঝুলানোর জন্য দড়ি, টিমটিমে লাইট, চিকন লম্বা একটা বাথরুম। আমি, রুবাইদা, মজুমদার আর মৌলি সব মালপত্তর নিয়ে উঠলাম। সবাই ক্লান্ত, ক্ষুধার্ত। একটু হাতমুখ ধুয়ে সবাই বের হয়ে পড়লাম।

প্রথমত টাকা ভাঙ্গাতে হবে, দ্বিতীয়ত সিম কিনতে হবে, তৃতীয়ত খেতে হবে কারণ আগেরদিন রাতে বাসায় শেষ খাওয়া খেয়েছিলাম। কিন্তু কিভাবে এতগুলো কাজ করবো? কোথায় যাবো? কাউকে তো চিনি না।

হোটেলের নিচেই পূর্ব পরিচিত প্রসূন ভাইয়াকে দেখে খুব ভালো লাগলো, বিদেশের মাটিতে আরেকজন পরিচিত মানুষ! ঠিক হলো ভাইয়া আমাদের সিম কিনে, খাওয়ার দোকানে যেতে সাহায্য করবেন। উর্মি, অদিতি আর চিং একটু ফ্রেশ হতে রুমে গেলো, মজুমদার এক মুচির কাছে ওর ছেঁড়া ব্যাগ সেলাই করতে দিলো, আমি আর রুবাইদা দাঁড়িয়ে রইলাম ফুটপাথে। ততক্ষণে সূর্য ডুবে গেছে। হলুদ অ্যাম্বাস্যাডার ট্যাক্সি, টিং টিং শব্দ করে ট্রামের ছুটে চলা, হাতে টানা রিক্সা, রাস্তা ভর্তি মানুষ, মার্কুইস স্ট্রিটের দুপাশের ঝলমলে বাতি- দেখতে দেখতে মনে হলো আমি মনে হয় কোন বই কিংবা সিনেমার সিনের ভেতর ঢুকে গেছি। দৃশ্যগুলো অনেক পরিচিত কিন্তু আগে কখনো কাছ থেকে দেখা হয় নাই। আর এখন আমার চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি প্রাণ চঞ্চল কোলকাতাকে! কি আশ্চর্য!

আমরা সবাই বের হলাম। মার্কুইস স্ট্রিট্রের শ্রীলেদার্সের আগে একটা চিপা গলির ভেতর ছোট্ট দোকানে লাইন ধরে আমরা সিম কিনলাম। ভোদাফোনের সিম। সব মিলিয়ে ৫৭০ রুপি খরচ পড়লো। এই টাকায় পেলাম সারা ইন্ডিয়ায় এক রেট, বাংলাদেশে প্রতি মিনিটে ২ রুপি আর সম্ভবত ২ জিবি থ্রিজি ইন্টারনেট- সবই এক মাসের জন্য। সাথে সাথে বাসায় ফোন দিয়ে কথা বললাম। কি যে ভালো লাগলো!

প্রসুন ভাইয়া আমাদের সব চিনিয়ে দিলেন মানি এক্সচেঞ্জ, মুসলমান হোটেল দাওয়াত, বাংলা ও চাইনিজ হোটেল  ভোজ, সকালের নাস্তার জন্য হোটেলের একদম কাছে আরাফাত হোটেল। অনেক চিন্তা ভাবনা করে আমরা ভোজে ঢুকলাম। শুরু হলো আমাদের ভেজ খাওয়ার মিশন। আমি আর রুবাইদা অর্ডার দিলাম ফ্রায়েড রাইস আর ভেজ মাঞ্চুরিয়ান। খাবার আসার সময়টুকুতে আমি একবার বাথরুমে ঢুঁ মেরে আসি। রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র যতটা মনোরম, বাথরুমটার ততটাই সদরঘাট অবস্থা।

একে একে আমাদের অনেকেই ভোজে এসে ঢুকতে থাকে। আমরা উঁচু গলায় হৈচৈ করতে থাকি, হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ি। খাবার এসে পড়লে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমাদের দেশের চাইনিজের সাথে ওদের চাইনিজের বেশ পার্থক্য। ফ্রায়েড রাইসে কামড় দিলে লবন টাইপের একটা কি জিনিস যেন কিচকিচ করে। তবে টেস্ট অন্যরকম হলেও বেশ মজা। আমার বিল আসে ৯৫ রুপি। তখন পর্যন্ত আমার টাকা ভাঙ্গানো হয় নাই। এই বিলটা মৌলি দিয়ে দেয়।

বিল মিটিয়ে আমরা পান মশলার বড় বড় মিছরিগুলি চিবাতে চিবাতে বের হয়ে আসি। মোড়ের শ্রীলেদার্সে ঢুকে পড়ি। শ্রীলেদার্স- আনন্দমেলায় কত অ্যাড দেখেছি- আজকে সত্যি সত্যি ঢুকে পড়লাম! আরে বাবা- জিনিস এত্ত সস্তা, মাথা ঘুরে গেলো। ঘুরে ঘুরে দেখলাম অনেক্ষণ ধরে। তারপর আবার ভোজে ফিরে গিয়ে হিমি আর সীমান্তকে খুঁজে বের করলাম, আমরা রওয়ানা দিলাম একসাথে মানি এক্সচেঞ্জের দিকে। কিন্তু রাত হয়ে যাওয়ায় দোকানে রেট কমিয়ে বলে। আমি আর হিমি রাগ করে অল্প কিছু টাকা ভাঙ্গাই। তারপর হেঁটে হেঁটে হোটেলের দিকে যেতে থাকি। রাতের মার্কুইস স্ট্রিটে আমরা হাঁটতে থাকি। আমি চারপাশ তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি। কি অদ্ভুত রাস্তাঘাট, অদ্ভুত মানুষজন। এইরকম রাস্তা, ট্যাক্সি, লোকজন এবং তাদের অন্যরকম আচরণ, তারা দেখতে আমারই মতন কিন্তু আবার একেবারেই আলাদা -সবকিছু মিলিয়েই আমার কাছে আশ্চর্য লাগতে থাকে।

হোটেলে ফিরে হাত পা ছড়িয়ে বসতে বসতেই সীমান্তর বার্থডে কেক কাটার সময় হয়ে যায়। ১২ টার সময় আমরা দোতলার বারান্দায় চিৎকার করে গান গেয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে সীমান্তকে উইশ করি আর সীমান্ত বার্থ ডে টুপি পড়ে হিমির আনা কেকটা কাটে। আমাদের হৈচৈয়ে পাশের রুম থেকে এক বাচ্চা তার মায়ের কোলে চেপে বের হয়ে আসে। ওকেও কেক দেওয়া হয়। আমরা হাই ভলিউমে কথা বলতেই থাকি। একটু পর কমপ্লেইন আসে যে একজন রোগি ঘুমাতে পারছে না। আমরা তাড়াতাড়ি সব গুছিয়ে রুমে ফেরত আসি।

মোম্বাতি সব জ্বালানো হয়েছে, এখনই কাটা হবে কেকটা! (কৃতজ্ঞতায় সারাহ তাবাসসুম)
মোম্বাতি সব জ্বালানো হয়েছে, এখনই কাটা হবে কেকটা! (কৃতজ্ঞতায় সারাহ তাবাসসুম)

আদিবা রুমে রুমে এসে পরদিনের প্ল্যান বলে যায়। ভোর ৬টার সময় ফুলের আড়ত, তারপর বেলুর মঠ, ফুড ফেস্টিভাল, ভিক্টোরিয়া, কফি হাউজ, হাওড়া ব্রিজ। আমি প্ল্যান শুনে রুমমেটদের বলে দেই সকাল ৬টার প্ল্যান আমার জন্য অসম্ভব। সারা দিন জার্নি করে রাতে মাত্র কয়েকঘন্টা ঘুমালে আমার চলবে না। তাই ঠিক হলো ওরা ওদের মতন যাবে, আমি অন্য কোন ব্যবস্থা করে নিবো।

চার জনে লম্বা হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। খুব সময় লাগলো না। ঘুমিয়ে পড়লাম। ইন্ডিয়াতে প্রথম ঘুম।

2 Replies to “The Mighty INDIA CALLING: যে অভিযানের শুরু কোলকাতায় (পর্ব ২)”

  1. তোর এইসব সিট এর এঙ্গেল, বিল কত রুপি এসব ও মনে আছে!!! একদিনে যা যা লিখসিশ, ৪০ দিনের টা মিলায়েও আমার এত ডিটেইল মনে নাই। Thinking

    1. ইয়েস ডিয়ার, আমি প্রতিদিন রুমে ফিরে নোটবুকে সারাদিন কি কি করা হলো, কোথায় কত খরচ করলাম- সেই সব টুকে রাখতাম। চিন্তা করে দ্যাখ, কতটা কষ্ট করেছি তখন!
      তাছাড়াও এই দিনগুলো আমি সর্বোচ্চ উপভোগ করেছি। তাই অটোমেটিক আমার স্মৃতিতে ডিটেইলগুলা রয়ে গেছে পাকাপাকিভাবে। কাজের জিনিস তো কিছু মনে থাকে না, এসব আজাইরা স্মৃতিতেই মেমরি ফুল হয়ে আছে আর কি……

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *